প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা ও দূরদর্শীতার জন্য বাংলাদেশে অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখলের সব দরজা বন্ধ হয়েছে। সংবিধানে ১৪ তম সংশোধনী এমনভাবে করা হয়েছে যার মাধ্যমে সামরিক হস্তক্ষেপ কিংবা অবৈধ ক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ক্যু এর রক্তাক্ত ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে সংবিধানের এই অনুচ্ছেদকে অপরিবর্তনীয় করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পথ চিরতরে বন্ধ হয়েছে।
সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনীর মাধ্যমে ৭(ক) অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত হয়েছে ৭ক এর (১) এ বলা হয়েছে ‘কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায়:
(ক) এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে কিংবা
(খ) এই সংবিধান বা ইহার কোন বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে-
তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।
শুধু তাই নয়, সংবিধানের ৭খ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে এই বিধান সহ আরো কিছু বিধানবলীকে মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত বিধানাবলী হিসেবে ঘোষণা করে এর ‘সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরন কিংবা অন্য কোন পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য’ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। ৭৫ এর পর থেকে বাংলাদেশে হত্যা ক্যু ষড়যন্ত্রের যে ধারা সূচিত হয়েছিল, সেখানে সেনা একনায়করা ক্ষমতায় এসেই প্রথমে সংবিধান স্থগিত করতেন। তারপর, সামরিক ফরমান দিয়ে অবৈধ পন্থায় দেশ চালাতেন। জিয়া এবং এরশাদ একই কায়দায় ক্ষমতা দখল করেছিলেন। জিয়া অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় এসে সংবিধানের মৌলিক চেতনাকেই পরিবর্তন করেন সাময়িক ফরমান বলে। পরবর্তীতে ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে এই সব অবৈধ ফরমানকে বৈধতা দিয়েছেন। এরশাদও একই কায়দায় ৭ম সংশোধনীর মাধ্যমে তার সব অবৈধ কাজকর্মকে বৈধতা দিয়েছেন। যদিও বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ৫ম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এমনভাবে সংবিধানকে সুরক্ষিত করেছেন যে, এমন কেউ ‘সংবিধান স্থগিত’ করতে পারবেনা। করলেই তিনি বা সেই গোষ্ঠী চিহ্নিত হবে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে।