টানা তৃতীয় মেয়াদে দুই বছর পার করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। দল এবং সরকারকে আলাদা করার কৌশল হিসেবে দলীয় অধিকাংশ নেতাকেই মন্ত্রীত্বে রাখা হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মাত্র ৫ জন আছেন বর্তমান মন্ত্রীসভায়। এরা হলেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য ড: আবদুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মনি ও তথ্যমন্ত্রী এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড: হাছান মাহমুদ।
৪৭ সদস্যের এই মন্ত্রী সভায় এই পাচজনই ক্লিন ইমেজের পরিচয় দিয়েছেন গত দুই বছর। মন্ত্রী হিসেবে এরা যেমন দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন, তেমনি দুর্নীতিও এদের স্পর্শ করতে পারেনি। এই পাঁচমন্ত্রীর কারো বিরুদ্ধেই দুর্নীতির কোন অভিযোগ নেই।
২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি বর্তমান মন্ত্রী সভা গঠিত হয়। নবীন প্রবীনের সংমিশ্রনে ঐ মন্ত্রীসভায়, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামূল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরীকে জায়গা দেয়া হয়। ঐ তিনজনই সে সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও সম্পাদক মন্ডলীতে থাকা স.ম রেজাউল করিমও মন্ত্রীসবার পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে জায়গা পান। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে এদের আর কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হয়নি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে এরা থাকুক আর নাই থাকুক এরা মন্ত্রীর চেয়ে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবেই বেশি পরিচিত। কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক এই চার নেতাও মন্ত্রী সভায় প্রতিশ্রুতির স্বাক্ষর রাখছেন। তাদের বিরুদ্ধেও কোন দুর্নীতির অভিযোগ নেই।
দেখা যাচ্ছে, যারা তৃণমূল থেকে ওঠে আসেন নি, অতীতে ছাত্ররাজনীতি করেননি, ব্যবসায়ী কিংবা পৈত্রিক সূত্রে এমপি হয়েছেন, মন্ত্রীও হয়েছেন। এরাই মন্ত্রণালয় চালাতে যেমন হিমশীম খাচ্ছেন তেমনি নানা বিতর্কে জড়িয়ে পরছেন। এই বাস্তবতা থেকেই নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে যে তাহলে কি নেতারাই ভালো মন্ত্রী? দল এবং সরকার আলাদা করে কি আসলে সরকার ব্যক্তির দায় কাধে নিচ্ছে? শেখ হাসনিার চিন্তা সঠিক। কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি অর্পিত দায়িত্ব পালন না করতে পারেন, এটা তার ব্যর্থতা।