বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে অতি প্রচলিত কথা হলো, আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। দলের অভ্যন্তরে যত দূর্বলতায় থাকুক না কেন, রাজপথের আন্দোলন শুরু হলো জোয়ার আসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রাণে।
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাস স্বাক্ষী যখনই দলটি কোন সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়ে দলটির নেতা কর্মীরা রাজপথের আন্দোলনে প্রাণ উজাড় নেমে আসে।
১৯৭১ সালে যেমন আওয়ামী লীগের কর্মীরা রাজপথের আন্দোলন লড়াই করেছিল তেমনি ২০২০ সালে এসে ভাস্কর্য ইস্যুতে ঐক্যবন্ধভাবে মাঠে নেমেছে।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জিতে তৃতীয় বারের মত ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দলটি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে। রাজনৈতিক মহলে কথা উঠেছিল ক্ষমতার রাজনীতির কারণে সাংগঠনিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ।
কিন্তু সকল জল্পনা-কল্পনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আওয়ামী লীগ আবারও প্রমাণ করলে রাজপথের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ অদ্বিতীয়।
হেফাজতের নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার হুঙ্কার দিলে সরব হয় আওয়ামী লীগ। দলটির শীর্ষমহল থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মীরাও হেফাজতের দাবির বিরুদ্ধে মাঠে নেমে আসে।
হেফাজতের যুগ্ন মহাসচিব মামুনুল হককে প্রতিহত করতে চট্টগ্রামে অবস্থান নেয় আওয়ামী যুব লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা। তাদের বাঁধার মুখে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পূর্ব নির্ধারিত সভায় যোগ দিতে পারেননি মামুনুল হক।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নানান কেলেঙ্কারিতে নাম আসে যুবলীগের। সাধারণের মনে ধারণা জন্মে যুবলীগ মানেই চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি। কিন্তু ভাস্কর্য ইস্যুকে কেন্দ্র করে যুবলীগও ফিরে গেছে তাদের পুরানো রুপে। ভাস্কর্য ইস্যুতে নানান কর্মসূচী দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দেয় সংগঠনটি।
আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন, আওয়ামীপন্থী পেশাজীবী সংগঠনগুলোও ভাস্কর্য ইস্যুতে মাঠে নেমে আসে। আওয়ামী লীগের এমন রুদ্র মূর্তি দেখে ভাস্কর্য ইস্যুতে পিছু হটতে বাধ্য হয় হেফাজত।
হেফাজতের ভাস্কর্য বিতর্ক প্রাথমিকভাবে আওয়ামী লীগ সরকারকে অস্বস্তিতে ফেললেও দলটির পুরোনো আন্দোলনের রুপে ফিরিয়ে আনতে হেফাজতের দাবি আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে। যার ফলে দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক সচেতন মহল আওয়ামী লীগকে রাজপথের পুরোনো আওয়ামী লীগের রুপে দেখতে পেয়েছে।