আওয়ামী লীগের চেইন অব কমান্ড রীতিমতো ভেঙ্গে পরেছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত তৃণমূল। দলের নেতারা প্রকাশ্যে একে অন্যকে আক্রমণ করছেন। এরকম একটি পরিস্থিতির অবসান চায়, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তারা মনে করছে, দলের অন্য নেতাদের কথা কেউ শুনবে না। এমনকি দলের সাধারণ সম্পাদকের হুমকি ধামকিতেও কাজ হবে না।
আওয়ামী লীগের তৃনমূল এখন একজন নেতার প্রতি আস্থাশীল, একজনের বক্তব্য এবং নির্দেশই তারা শুনবেন। তিনি হলেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন ‘আওয়ামী লীগের এই অস্থিরতা দুর করতে পারেন একজনই। তিনি হলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।’ তিনি বলেন ‘আওয়ামী লীগের ভেতরের যে সমস্যা তা এক নিমিষেই দূর করা সম্ভব। শুধু শেখ হাসিনা একটা হুংকার দেবেন। যারা দলের ভেতর সমস্যা করছে তাদের শেখ হাসিনা শুধু একটা ফোন করে তাদের সর্তক করবেন, তাহলেই সব সংকট নিমিষেই কেটে যাবে।’
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, জেলায় জেলায় আওয়ামী লীগের যে সমস্যা, তা সমাধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঐ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের কিন্তু জেলা, উপজেলা নেতারা সাংগঠনিক সম্পাদকদের খুব একটা মানেন না। তাছাড়া জেলা, উপজেলায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অনেক কেন্দ্রীয় নেতারাও ইন্ধন আছে। ফলে, সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশকে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পাত্তা দেননা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সাংগঠনিক সম্পাদকরা জেলা পর্যায়ে কোন্দল এবং অনুপ্রবেশ বন্ধে কিছু উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রথম মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনেক দৃশ্যমান এবং একটিভ ছিলেন।
বিভিন্ন জেলায় তিনি নিয়মিত যেতেন, সাংগঠনিক বিষয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি করতেন। তার অসুস্থতার পর থেকেই সাংগঠনিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে আওয়ামী লীগে। করোনা কালে তার চলাফেরা সীমিত হয়েছে। এটাও চেইন অব কমান্ড নষ্টের অন্যতম কারণ। আগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যরা অনেক কার্যকর ছিলেন। তারা জেলা উপজেলা এবং তৃনমূলের খোজ খবর নিতেন। আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আমীর হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, মোহাম্মদ নাসিমের মতো নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি ছিলো জাতীয় রাজনীতিতে। তাদের কর্মীরা মানতো, শ্রদ্ধা করতো। এই সব নেতাদের একটা কর্মী বলয় ছিলো। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্যের জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব নেই, যে কারণে তৃণমূলেও তাদের জনপ্রিয়তা নেই। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের এখন বিশ্বাস এবং আস্থার জায়গা একটাই, সেটা হলো শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ এখন শেখ হাসিনার একটা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।