জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে দক্ষিণ জনপদে উন্নয়নের আরেক মাইলফলক ফোর লেন ‘শেখ হাসিনা সড়কের’ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর সড়কপথে পণ্য খালাসের কার্যক্রম শুরুর আরও একধাপ এগিয়ে গেল সড়কটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে। পায়রাবন্দর থেকে কুয়াকাটা-ঢাকাগামী মহাসড়কের সংযোগ রজপাড়া পর্যন্ত পাঁচ দশমিক ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। প্রধানমন্ত্রী সড়কটির উদ্বোধন করবেন বলে একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণের এক সময়ের অবহেলিত কলাপাড়ার এই জনপদকে বিস্ময়কর উন্নয়নের ধারায় নিয়ে গেছেন। করেছেন আলোকিত জনপদ। যেখানে আরেক নবদিগন্তের উন্মোচনের অপেক্ষায় সাগরপারের মানুষ। কলাপাড়ার মানুষ এখন বিকেল হলেই দৃষ্টিনন্দন ফোর লেন শেখ হাসিনা সড়কটিতে ঘুরতে যায়। পরিজন নিয়ে একটু স্বস্তির পরশ খুঁজে সড়কটিতে ভ্রমণ করে।
কুয়াকাটায় যাওয়া-আসা পর্যটকরা থমকে দাঁড়ায় দৃষ্টিনন্দন সড়কটির প্রবেশদ্বার দেখতে পেয়ে। সড়কটির জিরো পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে শান্তির প্রতীক পায়রার (কবুতর) ডানা মেলা অবয়ব। এখানে আগতরা সুখকর স্মৃতি নিয়ে ফেরেন। মুহূর্তটি ধরে রাখেন সেলফিসহ ছবি তোলার মধ্য দিয়ে। দেখেন অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে; কীভাবে অনগ্রসর জনপদ ও সেখানখার মানুষকে সামনে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। এখানকার মানুষও নিজেদের দক্ষ করে তাল মেলাচ্ছেন দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায়। করে নিচ্ছেন নতুন কর্মসংস্থান।
পায়রাবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের পহেলা জানুয়ারি তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি পায়রাবন্দরের এই ফোর লেন সড়কটির কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনসহ নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পাঁচ দশমিক ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ ২৪ মিটার প্রস্থ আধুনিক সুবিধা সংবলিত সড়কটি নির্মাণে ব্যয়বরাদ্দ রয়েছে ২৫৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্নের কথা থাকলেও পরবর্তীতে এর সময়কাল বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সড়কটির নির্মাণ কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স। সড়কটিতে রয়েছে পাঁচটি দৃষ্টিনন্দন কালভার্ট। সড়কটি করতে কৃষি খেতে বহমান খাল রক্ষায় এসব কালভার্ট করা হয়েছে। কংক্রিটের তৈরি সড়কটির দুই দিকের স্লোপে ঘাসের গালিচার ওপর গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।
দৃষ্টিনন্দন করতে মাঝখানের ডিভাইডারে শোভাবর্ধন জাতের গাছের চারা রোপণন করা হয়েছে। গাছগুলো লক লক করে বেড়ে উঠছে। গোটা সড়কটিতে রাতে জ¦লছে বৈদ্যুতিক আলো। সড়কটির কালভার্ট স্পটগুলোতে দৃষ্টিনন্দন ছাপ রাখা হয়েছে। সড়কটি নির্মাণে ৫৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সড়কটি নির্মাণের ফলে পায়রাবন্দরের সঙ্গে সড়কপথেও পণ্য খালাসের পথ সুগম হলো। এখন এ সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় মুখিয়ে আছেন কলাপাড়ার পায়রাবন্দর এলাকার সকল মানুষ।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট নৌপথে পায়রাবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ২০১৩ সালের ১৯ নবেম্বর তিনি পায়রাবন্দরের উদ্বোধন করেন।