আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেছেন, ‘এমপি-মন্ত্রী ও নেতাদের দৌরাত্ম্য থেকে তৃণমূলকে প্রভাব মুক্ত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।’আওয়ামী লীগের দলীয় শৃঙ্খলার বিভিন্ন দিক নিয়ে একান্ত আলাপচারিতায় বাহাউদ্দিন নাসিম আরও বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কমিটি গঠন এবং মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। এর মাধ্যমে তৃণমূলে প্রভাব বলয় মুক্ত করে যোগ্য নেতাদের যোগ্য জায়গায় দায়িত্ব দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং এর ভেতর দিয়ে তৃণমূলের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে আরও মজবুত করা হবে।
তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারানোর জন্য বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তাদের বিরুদ্ধে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতীতের নির্বাচনে যারা নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিলেন এবার এ ধরনের আওয়ামী লীগের নেতাদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এটা অনেক শক্ত সিদ্ধান্ত। আর এই সিদ্ধান্তের ভেতর দিয়ে অনেক যোগ্য ও জনপ্রিয় ব্যক্তিও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। এ ধরনের কাজ এবারও যদি কেউ করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা ভোটের আগের দিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন তাদেরকে নিয়ে আলোচনা ও সমঝোতা করে সমন্বয়ের মাধ্যমে বসানোর চেষ্ঠা করা হয় এবং এই চেষ্টা এখনও চলমান। বোঝানো ও সমন্বয়ের পরেও যে ব্যক্তি দলীয় সিদ্ধান্তে বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন এবং কোনোভাবেই সমঝোতায় আসছেন না তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তৃণমূলে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে মাইম্যানদের দৌরাত্মের এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পছন্দের ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে তৎপর কেন্দ্রীয় নেতা কিংবা মন্ত্রী-এমপিদের তৎপরতার অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনমানুষের সংগঠন সুতরাং এখানে পদ পাওয়ার জন্য অনেক প্রার্থী থাকবে এমনটাই স্বাভাবিক। যদিও অধিকাংশ জায়গায় আলাপ-আলোচনার ভিত্তিকে কমিটি গঠন করা হয়। সেক্ষেত্রে এমপি-মন্ত্রী-নেতা যেই প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করুক সেটা ঠেকানোর জন্য সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। তৃণমূলে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আগে শুধু এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপের কথা বলা হলেও এখন দেখা যাচ্ছে কোনো কোনো জায়গায় নেতারাও হস্তক্ষেপ করেন। এসব জায়গাতে আমরা সমন্বয় করি এবং প্রয়োজন হলে তৃণমূলের কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হয়ে কমিটি গঠন করে প্রভাব বলয় মুক্ত করা হয়।